ছোঁয়াচে রোগ: ইসলাম কী বলে?
সম্প্রতি করোনা ভাইরাসকে কেন্দ্র করে অনেকেই জানতে চাচ্ছেন যে, ইসলামে ছোঁয়াচে রোগের বিশ্বাস ও রোগ সংক্রমণের ধারণা রাখা কুফুরী আকীদা কি না? এ প্রশ্নটি আসলে কেবল করোনার বিষয়ে নয়, বরং সকল ছোঁয়াচে রোগের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বক্ষমাণ প্রবন্ধে বিষয়টির শরয়ী সমাধান তুলে ধরা হবে। অর্থাৎ ইসলামে ছোঁয়াচে রোগের ধারণা রাখা যাবে কি না? রোগ সংক্রমণ করে এমন বিশ্বাস রাখা ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক কি না?
১. ইসলামের একটি স্বীকৃত ও চিরন্তন নীতি হলো, সকল ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহ। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কোন ক্ষমতা নেই। না আছে কোন মানুষের, না কোন বস্তুর।মুসলিম মাত্রই এ বিশ্বাস রাখা আবশ্যক ও অপরিহার্য। এ বিশ্বাস ছাড়া কোন ব্যক্তি মুসলমানই হতে পারে না।এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’লা বলেন:
أَنَّ ٱلۡقُوَّةَ لِلَّهِ جَمِیعࣰا وَأَنَّ ٱللَّهَ شَدِیدُ ٱلۡعَذَابِ
সমস্ত ক্ষমতা শুধুমাত্র আল্লাহরই জন্য এবং আল্লাহর আযাবই সবচেয়ে কঠিনতর।( সূর বাকারা, আয়াত:১৬৫)
ولله مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَمَا فِيهِنّ
আসমান- যমীন ও এতদুভয়ের মাঝে যা কিছু আছে সবকিছুর মালিকানা আল্লাহর।( সূরা মায়েদা, আয়াত: ১২০)
ما أصاب من مصيبة إلا بإذن الله
অর্থ: আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কোন বিপদ আসে না। ( সূরা তাগাবুন, আয়াত:১১)
ঠিক একইভাবে রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে রোগে আক্রান্ত হওয়াও আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। আল্লাহ চাইলেই কেবল ঐ ব্যক্তি রোগে আক্রান্ত হবে, অন্যথায় আক্রান্ত হবে না। রোগের নিজস্ব কোন ক্ষমতা নেই অন্যকে আক্রান্ত করার।
জাহেলী যুগে মানুষ মনে করতো, রোগের নিজস্ব ক্ষমতা আছে। নিজ ক্ষমতায় তা অন্যকে সংক্রমণ করে। এই বিশ্বাসকে হাদীসে খন্ডন ও অপনোদন করা হয়েছে।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: " لا عدوى " ‘রোগ-ব্যধি (তার নিজস্ব ক্ষমতায়) একজনের দেহ থেকে অন্য জনের দেহে সংক্রমণ করে না।’ ( সহীহ বুখারী, পৃষ্ঠা ১১২০, হাদীস নং:৫৭০৭)
এ হাদীসে মূলত ছোয়ছে রোগকে অস্বীকার করা হয়নি বরং বিশ্বাসের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে যে, রোগের নিজস্ব ক্ষমতা নেই অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ার। বরং সকল ক্ষমতা আল্লাহ তা’লার। ( আল-আরফুশ শাযী:২:৩১৫), আল-ফাজরুস সাতে’:৫৭০৭, আল-মিন্নাতুল কুবরা:১:২৬৫،, তুহফাতুল আহওয়াযী:৫:৪৩৯,তুহফাতুল আতীব্বা মিন কালামি খায়রিল আম্বীয়া:১:১৪,উমদাতুল ক্বারী, ৩১:৩২১,আউনুল ওয়াদুদ,১:১৬৫, ফয়যুল বারী, ৬:৫১)
আল্লামা ইবনুস সালাহ, তাকীয়ুদ্দীন সুবকী রহ. প্রমুখ উলামায়ে কেরাম এ মতটি গ্রহন করেছেন।
২. তবে আল্লাহ তা’লা নিজ ইচ্ছায় বিভিন্ন বস্তুর মধ্যে কিছু শক্তি দিয়ে রেখেছেন
যেমন- আগুনের মধ্যে আল্লাহ পুড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা দিয়েছেন । আগুন বিভিন্ন বস্তুকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেয়। তবে এটা আগুনের নিজস্ব শক্তি নয়। আল্লাহর দেয়া শক্তি। অনুরূপ ছুরির মধ্যে আল্লাহ ক্ষমতা দিয়েছেন কেটে ফেলার। তাই তো ছুরি বিভিন্ন বস্তুতে কেটে ফেলে। তবে এটা ছুরির নিজস্ব কোন ক্ষমতা নয়। আল্লাহর দেয়া শক্তি।
৩. এ শক্তি আল্লাহর ইচ্ছা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত:
এই প্রদেয় শক্তিও আবার আল্লাহর ইচ্ছা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তাই আল্লাহ ইচ্ছা না করলে ছুরি ও আগুনের শক্তি কার্যকর হবে না। এজন্যই আগুন ইব্রাহিম আ:কে পোড়াতে পারে নি।উল্টো আল্লাহর হুকুমে আগুন ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিলো এবং ইব্রাহিম আ: এর জন্য শান্তি ও নিরাপদ স্থানে পরিণত হয়েছিল।তদ্রুপ ছুরিও ইসমাঈল আ: কে কাটতে পারে নি। ইব্রাহীম আ: একাধিকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন কারণ সেখানে আল্লাহ হুকুম ও ইচ্ছা ছিলো না।সুতরাং এই আলোকে বলা যায়, আল্লাহ যদি চান রোগ অন্যত্র সংক্রমণ করতে পারে। আল্লাহ না চাইলে পারে না।
৪. প্রশ্ন হলো এ সকল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দুরে থাকা যাবে কি না:?
এ প্রশ্নের উত্তর হলো, হ্যাঁ। এসকল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা যাবে। বরং দূরে থাকাই উচিৎ। (শরহুয যুরক্বানী,৪;৪২৫)।কেননা আল্লাহর ইচ্ছা হলে ঐ রোগ অন্যত্র সংক্রমণ করতেও পারে। তাই এক্ষেত্রে আপনি দূরত্ব অবলম্বন করতে পারেন।
তাছাড়া নিজের ঈমানও সুরক্ষিত থাকবে। কেননা যদি ঐ ব্যক্তির পাশে যাওয়ার পর আপনি রোগে আক্রান্ত হন তাহলে আপনার মনে একথা আসতে পারে যে, এই রোগীর কাছে না আসলে হয়ত আপনার এই রোগ হতো না। অথচ আল্লাহ চাইলে আপনি এই রোগীর কাছে না আসলেও সে উক্ত রোগে আক্রান্ত হতো। আপনি তখন রোগকে নিজস্ব ক্ষমতায় সংক্রমক ভাববেন। অথচ সকল ক্ষমতা তো আল্লাহর।
তাছাড়া নিজের ঈমানও সুরক্ষিত থাকবে। কেননা যদি ঐ ব্যক্তির পাশে যাওয়ার পর আপনি রোগে আক্রান্ত হন তাহলে আপনার মনে একথা আসতে পারে যে, এই রোগীর কাছে না আসলে হয়ত আপনার এই রোগ হতো না। অথচ আল্লাহ চাইলে আপনি এই রোগীর কাছে না আসলেও সে উক্ত রোগে আক্রান্ত হতো। আপনি তখন রোগকে নিজস্ব ক্ষমতায় সংক্রমক ভাববেন। অথচ সকল ক্ষমতা তো আল্লাহর।
আর এজন্যই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
فر من المجذوم كما تفر من الأسد
অর্থাৎ সিংহ থেকে যেমন দূরে থাকো কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকেও তেমন দূরে থাকো।( সহীহ বুখারী, ১১২০, হাদীস নং:৫৭০৭)
তদ্রুপ সাকীফ গোত্রের এক কাফেলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে বায়আত হতে এলো। তারা বাইয়াত গ্রহণ করার পর বললো আমাদের সাথে এক ব্যক্তি এসেছে, সে কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত । নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে বললেন: قَدُ بَايَعْنَاكَ فَارْجِعْ অর্থাৎ তুমি ফিরে যাও, তোমার বায়আত হয়ে গেছে। ( সহীহ মুসলিম, পৃষ্ঠা: হাদীস নং: ৫৯৫৪)অন্যত্র নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
لا يوردن ممرض على مصح
রোগে আক্রান্ত উটের মালিক যেন তার উটকে সুস্থ উটের কাছে নিয়ে না যায়। ( সহীহ বুখারী, পৃষ্ঠা:১১৩০, হাদীস নং:৫৭৭১)
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন:
إذَا سمِعْتُمْ الطَّاعُونَ بِأَرْضٍ، فَلاَ تَدْخُلُوهَا، وَإذَا وقَعَ بِأَرْضٍ، وَأَنْتُمْ فِيهَا، فَلاَ تَخْرُجُوا مِنْهَا
অর্থাৎ “যখন তোমরা শুনবে যে, কোন স্থানে প্লেগ-রোগ হয়েছে, তাহলে সেখানে প্রবেশ করো না। আর যখন কোন স্থানে সেই রোগের প্রাদুর্ভাব হয় এবং তোমরা সেখানে থাকো, তাহলে সেখান হতে বের হয়ে যেয়ো না।”
(সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ৫৭২৮/ সহীহু মুসলিম, হাদীস নং ৫৯০৫)
এ হাদীসটি থেকেই মূলত আমাদের বর্তমান লকডাউন আর হোম কোয়ারেন্টাইনের ধারণাকে সমর্থন করে।
(সহীহুল বুখারী, হাদীস নং ৫৭২৮/ সহীহু মুসলিম, হাদীস নং ৫৯০৫)
এ হাদীসটি থেকেই মূলত আমাদের বর্তমান লকডাউন আর হোম কোয়ারেন্টাইনের ধারণাকে সমর্থন করে।
উল্লেখিত হাদীসগুলো থেকে বোঝা যায়, কেউ যদি এ সকল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দূরে থাকতে চায়, তাহলে সে দূরে থাকতে পারে। এটি শরীয়াহ পরিপন্থী কোন কাজ নয়। তবে এক্ষেত্রে আবশ্যকীয় শর্ত হলো, ব্যক্তির ভিতরে এই বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে থাকতে হবে যে, আল্লাহ চাইলেই কেবল রোগ তার পর্যন্ত সংক্রমণ করবে। অন্যথায় নয়। আর যদি কেউ দুরে না থাকে তাহলে তাও তার জন্য বৈধ। কেননা আল্লাহ চাইলে রোগীর সংস্পর্ষে না গেলেও সে এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তো দুরে থেকে কতটুকুই বা লাভ !ফলাফল দাঁড়ালো যে, সব কিছু আল্লাহ ইচ্ছাধীন।
২.কোন কোন বস্তুর মধ্যে আল্লাহ কিছু ক্ষমতা দিয়ে রেখেছেন। যেমন, ঔষধের মধ্যে রোগ নিরামকের ক্ষমতা। আগুনের মধ্যে পুড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা। ছুরির মধ্যে কেটে ফেলার ক্ষমতা। তদ্রুপ কিছু রোগের মধ্যে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা। তবে এসকল ক্ষমতা এদের নিজস্ব নয়, বরং তা সকল ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহর পক্ষ থেকেই দেয়া।
৩.এই ক্ষমতাও আবার আল্লাহর ইচ্ছা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আল্লাহর ইচ্ছা না থাকলে দেখা যাবে এই ক্ষমতা কাজ করছে না।
৪.এসকল বিষয় বিশ্বাস রাখার সাথে সাথে নিজের সতর্কতা অবলম্বন করা যাবে। আর সেজন্য এই রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তি থেকে দুরে থাকতে চাইলে দুরে থাকা যাবে। প্রকাশ থাকে যে, প্রথম তিনটি বিষয় বিশ্বাস ও আক্বীদা সংক্রান্ত (Thurical)। আর চতুর্থ বিষয়টি (Practical)।
৫.সতর্কতা অবলম্বন করা স্বত্বেও যে কোন রোগ হতে পারে। কেননা এটা আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। আল্লাহ চাইলে সংস্পর্শ ছাড়াও এ রোগ হতে পারে।বি.দ্র. হাদীসে কেবল রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তি থেকে দুরে থাকতে বলা হয়েছে। সুতরাং কেউ যদি রোগে আক্রান্ত না হয়ে থাকে বা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ থাকে তাহলে তার থেকে দূরত্ব অবলম্বনের মাত্রা কিছুটা কম করা যেতে পারে।
সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য হবে। যে ব্যক্তি নিশ্চিত করোনায় আক্রান্ত কেবল তার থেকে দুরে থাকার আদেশই হাদীসে করা হয়েছে।
পক্ষান্তরে যে ব্যাক্তি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত নয় তার থেকে দুরত্ব অবলম্বনের মাত্রা আর নিশ্চিত করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দুরে থাকার মাত্রা এক পর্যায়ের হওয়া সমীচীন নয়। উপরোন্ত কোন ব্যক্তির মৃত্যু হলে তার কাফন-দাফনের ব্যবস্থা না করে পালিয়ে যাওয়া জঘন্য অমানবিক আচরণ বৈ কি। অথচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের গবেষণা অনুযায়ী মৃত্যুর পর নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর ব্যক্তির মাঝে ভাইরাস থাকেই না।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন।
লিখেছেন-
মাওলানা রফিকুল ইসলাম
গ্রন্থপঞ্জি :-
আল-কুরআনুল কারীম
তাফসীরে কুরতুবী
সহীহ বুখারী
সহীহ মুসলিম
ফাতহুল বারী
শরহু ইবনে বাত্তাল
মুয়াত্বা মালেক
শরহুয যুরক্বানী
আল-আরফুশ শাযী
আল-ফাজরুস সাতে
আল-মিন্নাতুল কুবরা
তুহফাতুল আহওয়াযী
উমদাতুল ক্বারী
আউনুল ওয়াদুদ
ফয়যুল বারী
মিরক্বাতুল মাফাতীহ
বাযলুল মাজহুদ।
সারকথা
১.সকল ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহ তা’য়ালা। আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া গাছের একটি পাতাও নড়ে না। এ বিশ্বার রাখা সকল মুমিনের জন্য আবশ্যক। এ বিশ্বাস ছাড়া কোন ব্যাক্তি মুসলমান হতে পারে না।২.কোন কোন বস্তুর মধ্যে আল্লাহ কিছু ক্ষমতা দিয়ে রেখেছেন। যেমন, ঔষধের মধ্যে রোগ নিরামকের ক্ষমতা। আগুনের মধ্যে পুড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা। ছুরির মধ্যে কেটে ফেলার ক্ষমতা। তদ্রুপ কিছু রোগের মধ্যে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা। তবে এসকল ক্ষমতা এদের নিজস্ব নয়, বরং তা সকল ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহর পক্ষ থেকেই দেয়া।
৩.এই ক্ষমতাও আবার আল্লাহর ইচ্ছা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। আল্লাহর ইচ্ছা না থাকলে দেখা যাবে এই ক্ষমতা কাজ করছে না।
৪.এসকল বিষয় বিশ্বাস রাখার সাথে সাথে নিজের সতর্কতা অবলম্বন করা যাবে। আর সেজন্য এই রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তি থেকে দুরে থাকতে চাইলে দুরে থাকা যাবে। প্রকাশ থাকে যে, প্রথম তিনটি বিষয় বিশ্বাস ও আক্বীদা সংক্রান্ত (Thurical)। আর চতুর্থ বিষয়টি (Practical)।
৫.সতর্কতা অবলম্বন করা স্বত্বেও যে কোন রোগ হতে পারে। কেননা এটা আল্লাহর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। আল্লাহ চাইলে সংস্পর্শ ছাড়াও এ রোগ হতে পারে।বি.দ্র. হাদীসে কেবল রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তি থেকে দুরে থাকতে বলা হয়েছে। সুতরাং কেউ যদি রোগে আক্রান্ত না হয়ে থাকে বা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ থাকে তাহলে তার থেকে দূরত্ব অবলম্বনের মাত্রা কিছুটা কম করা যেতে পারে।
সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য হবে। যে ব্যক্তি নিশ্চিত করোনায় আক্রান্ত কেবল তার থেকে দুরে থাকার আদেশই হাদীসে করা হয়েছে।
পক্ষান্তরে যে ব্যাক্তি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত নয় তার থেকে দুরত্ব অবলম্বনের মাত্রা আর নিশ্চিত করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দুরে থাকার মাত্রা এক পর্যায়ের হওয়া সমীচীন নয়। উপরোন্ত কোন ব্যক্তির মৃত্যু হলে তার কাফন-দাফনের ব্যবস্থা না করে পালিয়ে যাওয়া জঘন্য অমানবিক আচরণ বৈ কি। অথচ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের গবেষণা অনুযায়ী মৃত্যুর পর নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর ব্যক্তির মাঝে ভাইরাস থাকেই না।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন।
লিখেছেন-
মাওলানা রফিকুল ইসলাম
গ্রন্থপঞ্জি :-
আল-কুরআনুল কারীম
তাফসীরে কুরতুবী
সহীহ বুখারী
সহীহ মুসলিম
ফাতহুল বারী
শরহু ইবনে বাত্তাল
মুয়াত্বা মালেক
শরহুয যুরক্বানী
আল-আরফুশ শাযী
আল-ফাজরুস সাতে
আল-মিন্নাতুল কুবরা
তুহফাতুল আহওয়াযী
উমদাতুল ক্বারী
আউনুল ওয়াদুদ
ফয়যুল বারী
মিরক্বাতুল মাফাতীহ
বাযলুল মাজহুদ।
কোন মন্তব্য নেই