ভূমিজরিপ শেখার সহজপাঠ, ষষ্ঠ পর্ব: দলিল (পর্চা) থেকে অংশ নির্ণয়ের পদ্ধতি
দলিল (পর্চা) থেকে অংশ নির্ণয়ের পদ্ধতি
(বি.দ্র: এই প্রবন্ধটি সদ্যসমাপ্ত একটি কোর্স এর সারসংক্ষেপ)
মূল আলোচক: মাস্টার ট্রেইনার মাওলানা আব্দুল আজিজ।
অনুলিখন: মুহাম্মাদ ইলিয়াস হুসাইন।
মূল আলোচক: মাস্টার ট্রেইনার মাওলানা আব্দুল আজিজ।
অনুলিখন: মুহাম্মাদ ইলিয়াস হুসাইন।
প্রাথমিক আলোচনা:
দলিলে জমির অংশ দু'ভাবে লেখা হয়ে থাকে।
১, আনা গন্ডা কড়া পদ্ধতি বা প্রাচীন পদ্ধতি
২, হাজার পদ্ধতি বা আধুনিক পদ্ধতি
১, আনা গন্ডা কড়া পদ্ধতি বা প্রাচীন পদ্ধতি
২, হাজার পদ্ধতি বা আধুনিক পদ্ধতি
আজ আমরা প্রথম পদ্ধতিতে কিভাবে দলিল থেকে অংশ নির্ণয় করতে হয় এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
প্রথমেই আমাদেরকে প্রয়োজনীয় কিছু একক সম্পর্কে জানতে হবে
মোট পাঁচটি একক রয়েছে । যথা :
আনা
গন্ডা
করা
ক্রান্তি
তিল
আনা
গন্ডা
করা
ক্রান্তি
তিল
এগুলোর প্রথমটি দ্বিতীয়টির চেয়ে বড়
সুতরাং
২০ তিল = ১ ক্রান্তি
৩ ক্রান্তি= ১ কড়া
৪ কড়া = ১গন্ডা
২০ গন্ডা = ১ আনা
১৬ আনা = পূর্ণ সম্পত্তি
২০ তিল = ১ ক্রান্তি
৩ ক্রান্তি= ১ কড়া
৪ কড়া = ১গন্ডা
২০ গন্ডা = ১ আনা
১৬ আনা = পূর্ণ সম্পত্তি
অথবা
পূর্ণ সম্পত্তি
= ১৬ আনা
=১৬x২০= ৩২০ গন্ডা
=৩২০x৪= ১২৮০ কড়া
=১২৮০x৩= ৩৮৪০ ক্রান্তি
=৩৮৪০x২০= ৭৬৮০০ তিল
পূর্ণ সম্পত্তি
= ১৬ আনা
=১৬x২০= ৩২০ গন্ডা
=৩২০x৪= ১২৮০ কড়া
=১২৮০x৩= ৩৮৪০ ক্রান্তি
=৩৮৪০x২০= ৭৬৮০০ তিল
উপরের আলোচনা দ্বারা আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে, আনার সর্বোচ্চ সংখ্যা 16 কিন্তু লেখা হয় 15 পর্যন্ত। কারণ 16 হলে তখন আর আনা লেখা হয়না বরং পূর্ণ সম্পত্তি বা এক লেখা হয়।
এমনিভাবে
গন্ডার সর্বোচ্চ সংখ্যা 20 কিন্তু লেখা হয় 19 পর্যন্ত
কড়ার সর্বোচ্চ সংখ্যা 4 লেখা হয় 3 পর্যন্ত
ক্রান্তির সর্বোচ্চ সংখ্যা 3 লেখা হয় 2 পর্যন্ত
তিলের সর্বোচ্চ সংখ্যা 20 লেখা হয় 19 পর্যন্ত
গন্ডার সর্বোচ্চ সংখ্যা 20 কিন্তু লেখা হয় 19 পর্যন্ত
কড়ার সর্বোচ্চ সংখ্যা 4 লেখা হয় 3 পর্যন্ত
ক্রান্তির সর্বোচ্চ সংখ্যা 3 লেখা হয় 2 পর্যন্ত
তিলের সর্বোচ্চ সংখ্যা 20 লেখা হয় 19 পর্যন্ত
প্রতীক চিহ্ন
উপরের প্রতিটি একককে দলিলে বিভিন্ন প্রতীক দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
নিম্নে প্রতিটি এককের প্রতীকসমূহ ধারাবাহিক ভাবে লেখা হল:
নিম্নে প্রতিটি এককের প্রতীকসমূহ ধারাবাহিক ভাবে লেখা হল:
আনা সংক্রান্ত
⁄ = ১ আনা
৵ = ২ আনা
৶ = ৩ আনা
৷ = ৪ আনা
৷⁄ = ৫ আনা
৷৵ = ৬ আনা
৷৶ = ৭ আনা
৷৷ = ৮ আনা
৷৷⁄ = ৯ আনা
৷৷৵ = ১০ আনা
৷৷৶ = ১১ আনা
৸ = ১২ আনা
৸ ⁄ = ১৩ আনা
৸৵ = ১৪ আনা
৸৶ = ১৫ আনা
১ = ১৬ আনা
⁄ = ১ আনা
৵ = ২ আনা
৶ = ৩ আনা
৷ = ৪ আনা
৷⁄ = ৫ আনা
৷৵ = ৬ আনা
৷৶ = ৭ আনা
৷৷ = ৮ আনা
৷৷⁄ = ৯ আনা
৷৷৵ = ১০ আনা
৷৷৶ = ১১ আনা
৸ = ১২ আনা
৸ ⁄ = ১৩ আনা
৸৵ = ১৪ আনা
৸৶ = ১৫ আনা
১ = ১৬ আনা
গণ্ডা সংক্রান্ত
১ = ১ গণ্ডা
২ = ২ গণ্ডা
৩ = ৩ গণ্ডা
৪ = ৪ গণ্ডা
৫ = ৫ গণ্ডা
৬ = ৬ গণ্ডা
৭ = ৭ গণ্ডা
৮ = ৮ গণ্ডা
৯ = ৯ গণ্ডা
১০ = ১০ গণ্ডা
১১ = ১১ গণ্ডা
১২ = ১২ গণ্ডা
১৩ = ১৩ গণ্ডা
১৪ = ১৪ গণ্ডা
১৫ = ১৫ গণ্ডা
১৬ = ১৬ গণ্ডা
১৭ = ১৭ গণ্ডা
১৮ = ১৮ গণ্ডা
১৯ = ১৯ গণ্ডা
১ = ১ গণ্ডা
২ = ২ গণ্ডা
৩ = ৩ গণ্ডা
৪ = ৪ গণ্ডা
৫ = ৫ গণ্ডা
৬ = ৬ গণ্ডা
৭ = ৭ গণ্ডা
৮ = ৮ গণ্ডা
৯ = ৯ গণ্ডা
১০ = ১০ গণ্ডা
১১ = ১১ গণ্ডা
১২ = ১২ গণ্ডা
১৩ = ১৩ গণ্ডা
১৪ = ১৪ গণ্ডা
১৫ = ১৫ গণ্ডা
১৬ = ১৬ গণ্ডা
১৭ = ১৭ গণ্ডা
১৮ = ১৮ গণ্ডা
১৯ = ১৯ গণ্ডা
কড়া সংক্রান্ত
৷ = ১ কড়া
৷৷ = ২ কড়া
৸ = ৩ কড়া
৷ = ১ কড়া
৷৷ = ২ কড়া
৸ = ৩ কড়া
ক্রান্তি সংক্রান্ত
৴ = ১ ক্রান্তি
৴৴ = ২ ক্রান্তি
৴ = ১ ক্রান্তি
৴৴ = ২ ক্রান্তি
তিল সংক্রান্ত
১ = ১ তিল
২ = ২ তিল
৩ = ৩ তিল
৪ = ৪ তিল
৫ = ৫ তিল
৬ = ৬ তিল
৭ = ৭ তিল
৮ = ৮ তিল
৯ = ৯ তিল
১০ = ১০ তিল
১১ = ১১ তিল
১২ = ১২ তিল
১৩ = ১৩ তিল
১৪ = ১৪ তিল
১৫ = ১৫ তিল
১৬ = ১৬ তিল
১৭ = ১৭ তিল
১৮ = ১৮ তিল
১৯ = ১৯ তিল
১ = ১ তিল
২ = ২ তিল
৩ = ৩ তিল
৪ = ৪ তিল
৫ = ৫ তিল
৬ = ৬ তিল
৭ = ৭ তিল
৮ = ৮ তিল
৯ = ৯ তিল
১০ = ১০ তিল
১১ = ১১ তিল
১২ = ১২ তিল
১৩ = ১৩ তিল
১৪ = ১৪ তিল
১৫ = ১৫ তিল
১৬ = ১৬ তিল
১৭ = ১৭ তিল
১৮ = ১৮ তিল
১৯ = ১৯ তিল
সাদৃশ্যতা দূরীকরণ
উপরের প্রতীকগুলো খেয়াল করলে দেখবেন কিছু কিছু প্রতীকে সাদৃশ্যতা রয়েছে। যেমন, যদি 12 লেখা থাকে তাহলে তা গন্ডা হতে পারে তিলও হতে পারে এমনিভাবে ৸ চিহ্নটির দ্বারা তিন কড়া ও বুঝায় আবার বারো আনাও বুঝায়। এখন প্রশ্ন হলো এই সাদৃশ্যতা দূর করার উপায় কি?
এর উপায় দুইটি
এক, ধারাবাহিকতা অর্থাৎ লেখার সময় প্রথমে আনা তারপর গন্ডা... কড়া ..ক্রান্তি... তিল এভাবে লিখতে হবে।
এক, ধারাবাহিকতা অর্থাৎ লেখার সময় প্রথমে আনা তারপর গন্ডা... কড়া ..ক্রান্তি... তিল এভাবে লিখতে হবে।
দুই, আনা লেখার পর একটি ফোটা দিতে হবে আর গন্ডার পর ~ এই চিহ্ন দিতে হবে। তিলের পর ~ এই চিহ্ন দিতে হবে দ্বিগুণ করে।
আর কড়া ও ক্রান্তির সংখ্যার নিচে ~ এই চিহ্ন দিতে হবে।
আর কড়া ও ক্রান্তির সংখ্যার নিচে ~ এই চিহ্ন দিতে হবে।
অংশ নির্ণয়ের পদ্ধতি
সমস্ত প্রতীক জানার পর এবার আমরা দলিল থেকে প্রত্যেক ব্যক্তির জমির অংশের পরিমাণ নির্ণয় করব।
ধরি জমির পরিমাণ 250 শতাংশ।
ব্যক্তির নাম রশিদ মিয়া। দলিলে তার অংশ হিসেবে লেখা আছে:
৷⁄ ১০ ৷ ৴
ব্যক্তির নাম রশিদ মিয়া। দলিলে তার অংশ হিসেবে লেখা আছে:
৷⁄ ১০ ৷ ৴
প্রতীক অনুযায়ী এখানে লেখা আছে পাঁচ আনা 10 গন্ডা 1 করা 1 ক্রান্তি।
এখন বড় অংশকে সর্বনিম্ন এককে পরিণত করতে হবে। যেহেতু এখানে সর্বনিম্ন একক ক্রান্তি তাই বাকি সবগুলোকে ক্রান্তিতে পরিণত করতে হবে
৫x২০+১০x৪+১x৩+১ = ১৩২৪
এবার ষোলআনাকেও ক্রান্তিতে পরিণত করতে হবে।
উপরে উল্লেখিত হিসাব থেকে আমরা জেনেছি ষোল আনা সমান ৩৮৪০ ক্রান্তি
এরপর মোট সম্পত্তি কে অংশ দ্বারা গুণ এবং উক্ত গুণফলকে ষোলআনা দ্বারা ভাগ দিতে হবে।
এখানে অংশ ১৩২৪
সুতরাং
২৫০x১৩২৪÷৩৮৪০
= ৮৬.১৯৭৯
২৫০x১৩২৪÷৩৮৪০
= ৮৬.১৯৭৯
অতএব, এখানে রশিদ মিয়ার জমির পরিমাণ ৮৬.১৯৭৯ শতাংশ
একটি সহজ টিপস
আমরা ইচ্ছা করলে আনা গন্ডা কড়া ক্রান্তির সমস্ত হিসাব খুব সহজেই মোবাইলের একটি সফটওয়্যার এর মাধ্যমে করতে পারি। নিচে সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করার লিঙ্ক দেওয়া হল:
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.tanvirbjsc.moinuddinkadir.koragonda
অথবা প্লে স্টোরে গিয়ে কড়ায়-গণ্ডায় লিখে সার্চ দিলেও পেয়ে যাবেন।
আগের পর্বগুলোর লিঙ্ক নিচে দেওয়া হল:
প্রথম পর্ব:
https://almajlisulelmi.blogspot.in/2018/03/blog-post_5.html?m=1
দ্বিতীয় পর্ব:
https://almajlisulelmi.blogspot.in/2018/03/blog-post_91.html?m=1
তৃতীয় পর্ব:
http://almajlisulelmi.blogspot.in/2018/03/blog-post_88.html?m=1
চতুর্থ পর্ব:
https://almajlisulelmi.blogspot.in/2018/03/blog-post_49.html?m=1
পঞ্চম পর্ব:
https://almajlisulelmi.blogspot.in/2018/03/blog-post_87.html
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.tanvirbjsc.moinuddinkadir.koragonda
অথবা প্লে স্টোরে গিয়ে কড়ায়-গণ্ডায় লিখে সার্চ দিলেও পেয়ে যাবেন।
আগের পর্বগুলোর লিঙ্ক নিচে দেওয়া হল:
প্রথম পর্ব:
https://almajlisulelmi.blogspot.in/2018/03/blog-post_5.html?m=1
দ্বিতীয় পর্ব:
https://almajlisulelmi.blogspot.in/2018/03/blog-post_91.html?m=1
তৃতীয় পর্ব:
http://almajlisulelmi.blogspot.in/2018/03/blog-post_88.html?m=1
চতুর্থ পর্ব:
https://almajlisulelmi.blogspot.in/2018/03/blog-post_49.html?m=1
পঞ্চম পর্ব:
https://almajlisulelmi.blogspot.in/2018/03/blog-post_87.html
Next....
উত্তরমুছুনমাশাল্লাহ। ধন্যবাদ সেই ভাইকে যে এই জটিল বিষয়টি এত সহজ ভাবে উপস্থাপন করেছেন।
উত্তরমুছুন